দীর্ঘ দিন পর মার্জিন ঋণ নীতিমালা চূড়ান্ত হবার পরও বিনিয়োগকারীদের অপেক্ষার অবসান হয়নি। হাউজগুলো মার্জিন লোন নিয়ে পূর্বের মতোই টালবাহানা করছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) মার্জিন ঋণ নীতিমালা সংক্রান্ত নির্দেশনা উপেক্ষা করে হাউজগুলো বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য লোন দিচ্ছে না। এছাড়া শেয়ার সেল করা মাত্র পূর্বের লোনের টাকা এডজাস্ট করা হচ্ছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেন।
মনির আহমেদ, সাইফুল ইসলাম, সিরাজুল হক, আলাউদ্দিনসহ একাধিক বিনিয়োগকারী এ ব্যাপারে শেয়ারনিউজ২৪ডটকমে অভিযোগ করে বলেন, অধিকাংশ হাউজ লোন দিতে চায় না। মূলধন ঘাটতি দেখিয়ে অনেক হাউজ নির্ধারিত পরিমানের চেয়ে কম লোন দিচ্ছে। অর্থাৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি নির্ধারিত ১:২ হারে কোনো হাউজই লোন দিচ্ছে না। অথচ আগামী জুন ২০১৩ তারিখ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা ১:২ হারে মার্জিন লোন পাবার অধিকার রাখেন। অধিকাংশ বিনিয়োগকারী লোকসানে থাকায় তাদেরকে নতুন করে লোন দেয়া হচ্ছে না। অনেকের পারচেস পাওয়ার থাকলেও নতুন করে লোন দেয়ার ক্ষেত্রে নানা রকমের টালবাহানা করা হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত হাউজ কর্মকর্তারা একজন আরেকজনের কাঁধে দায়িত্ব চাপিয়ে লোন দেয়া থেকে বিরত থাকছে।
বিনিয়োগকারীরা আরো অভিযোগ করেন, শেয়ার সেল দেয়া এখন আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। লোকসান কাটানোর জন্য সামান্য লাভে শেয়ার সেল দিলে কিংবা এক শেয়ার ছেড়ে অন্য শেয়ারে যেতে চাইলে হাউজগুলো লোন সমন্বয় করছে।
সোনালী ইনভেস্টমেন্ট মনিরুজ্জামান বলেন, আমার মূলধন ছিল ৫ লাখ টাকা। এর সঙ্গে আরো ৫ লাখ টাকা লোন নিয়েছিলাম। বর্তমানে আমার ক্রয়কৃত শেয়ারগুলোর মূল্য মাত্র ৪ লাখ টাকায় এসে ঠেকেছে। এমতাবস্থায় এক লাখ টাকার শেয়ার সেল দিলেই হাউজ ১০ হাজার টাকা কেটে রাখছে। ফলে লোকসান সমন্বয় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
একই অভিযোগ করেন, ব্রাক ইপিএলের বিনিয়োগকারী নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বর্তমান মন্দা বাজারে হাউজগুলো যদি সহায়তা না করে তবে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো সময় লাগবে।
এদিকে মার্জিন লোনের ব্যাপারে নাম প্রকাশে একজন বিনিয়োগকারী বলেন, প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো তার পারচেস পাওয়ার থাকা সত্ত্বে তাকে ১:২ হারে লোন দেয়া হচ্ছে না। হাউজের (নাম প্রকাশ করেননি) দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি তাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোতি নিতে বলেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও দেখা পাননি বলে ওই বিনিয়োগকারী জানান।
একাধিক বিনিয়োগকারী বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ শেয়ারের দর আকর্ষণীয় মূল্যে রয়েছে। এখন যদি লোন পাওয়া যেত তবে পুঞ্জীভুত লোকসান কাটিয়ে উঠা অনেকটা সহজ হতো। কিন্তু হাউজগুলোর অসহযোগিতা খুবই দুঃখজনক।
এ ব্যাপারে একাধিক হাউজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা এ ব্যাপারে কথা বলতে চাননি। তবে দু’একজন মূলধন সংকটের কথা বলেছেন।
শেয়ারনিউজের অনুসন্ধানে জানা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লোন দেয়ার আগে হাউজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপরের নির্দেশ না থাকায় বিনিয়োগকারীদের সরাসরি না করে দিচ্ছেন। যেসব বিনিয়োগকারী তাদের অধিকারের ব্যাপারে জোর তৎপরতা দেখান তাদেরকে হাউজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে সমঝোতা হলেও এসইসি নির্দেশিত ১:২ হারে লোন দেয়া হয় না। তবে পূর্ব পরিচিত কিংবা আত্মীয় স্বজন হলে এক্ষেত্রে তেমন কোনো সমস্যা হয় না।
No comments:
Post a Comment
!!! Thank You !!!