দেশের বীমা শিল্পের উন্নয়নে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইন্স্যুরেন্স আইন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রক সংস্থার দেয়া নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। মামলা করে নির্দেশনা স্থগিত করার পথ পরিহার করতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর অনিয়ম খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের (বিআইএ) গঠিত টাক্সফোর্স কমিটির কাজে সার্বিক সহায়তা করতে হবে। কোনো কোম্পানি টাক্সফোর্স কমিটির কাজে বাধা দিলে ওই কোম্পানিকে বিআইএ থেকে তালিকাচ্যুত করা হবে। আজ বুধবার হোটেল পূর্বানীতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এসব কথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি শেখ কবির হোসেন।
শেখ কবির হোসেন বলেন, বাংলাদেশের ইন্স্যুরেন্স আইন যথাযথ প্রয়োগে নতুন রেগুলেটরী অথরিটি আইডিআরএ বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এতে বীমা খাতের বিরাজমান সমস্যার সমাধান হবে। এজন্য কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
কবির হোসেন জানান, সম্প্রতি আইডিআরএ একটি কোম্পানিতে অডিট নিয়োগ করে। কিন্তু কোম্পানিটি এর বিরুদ্ধে মামলা করে অডিট স্থগিত করেছে। এটি ঠিক নয়। এ মানসিকতা পরিহার করতে হবে। স্বচ্ছভাবে ব্যবসা করতে হবে।
বিআইএ’র গঠিত টাক্সফোর্সের বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো সাধারণ বীমা কোম্পানি অনিয়ম করছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে টাক্সফোর্স নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ কোম্পানি এ কমিটিকে সহায়তা না করে নানাভাবে তাদের কাজে বাধা দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এখন থেকে যে কোম্পানি এ কমিটির কাজে বাধা দিবে আমরা বুঝবো ওই কোম্পানি সঠিকভাবে ব্যবসা করছে না। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এ্যাসোসিয়েশন ওই কোম্পানির সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করবে।
সাধারণ সভায় উপস্থাপিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালে জীবন বীমা খাতে বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোর উপার্জিত প্রিমিয়াম ৬ হাজার ৭ কোটি টাকা। যা ২০১০ সালে ছিল ৫ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০১১ সালে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
অপরদিকে ২০১১ সালে বেসরকারি সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো প্রিমিয়াম আয় করেছে ১ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। যা ২০১০ সালে ছিল ১ হাজার ৪৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর প্রিমিয়াম আয় বেড়েছে ১৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
বেসরকারি জীবন বীমা খাতের লাইফ ফান্ড ২০১১ সালের শেষে ২১ দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকায়। যা ২০১০ সালে ১৩ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা ছিল। আর ২০১১ সালে বিনিয়োগে ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ১৪ হাজার ২৩২ কোটি টাকায় এবং মোট সম্পদ ২৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে ১৮ হাজার ৯২১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
অপরদিকে সাধারণ বীমা খাতে বিনিয়োগ ২০১০ সালের তুলনায় ২০১১ সালে ৩২ দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা এবং সম্পদ ৪ হাজার ২০৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এম. মঈদুল ইসলাম, মেঘনা লাইফ এবং কর্ণফুলি ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমেদ, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ্ আবুল কাশেম, রূপালী ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি.কে. রায়, মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের কনসালটেন্ট এবিএম নূরুল হক, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান মজুমদার, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও গ্রুপ সিএফও ফারজানা চৌধুরী, জনতা ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল হক খান, ঢাকা ইন্সু্যুরেন্সের ব্যবস্থ্পানা পরিচালক এ কিউ এম ওয়াজেদ আলী, কর্ণফুলি ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফিজ উল্লাহ, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল মুইজ লাইওয়ালা, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ডিএমডি স্বপন কুমার সরকার বক্তব্য রাখেন।
No comments:
Post a Comment
!!! Thank You !!!